কৃষি সংবাদদাতা: চলতি মৌসুমে নরসিংদী জেলায় ১ হাজার ৮ শত ৯০ হেক্টর জমিতে লটকনের চাষ হয়েছে। আশানুরূপ ফলন হয়েছে, দামও ভাল পাচ্ছেন চাষীরা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, নরসিংদী সূত্রে জানা গেছে, এ বছর ১ হাজার ৮৯০ হেক্টর জমিতে লটকনের চাষ হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে প্রায় ২০০ হেক্টর বেশি। হেক্টর প্রতি গড় ফলন হয়েছে ১৭ মেট্রিক টন। মোট উৎপাদনের পরিমাণ ৩২ হাজার মেট্রিক টন। বর্তমান বাজার মূল্যে যা প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা। চাহিদা বৃদ্ধি, আশানুরূপ ফলন ও ন্যায্য দাম পাওয়ায় খুশি লটকন চাষীরা। এ জেলায় প্রতিবছরই বাড়ছে লটকনের চাষ। এখানকার কৃষকরা বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবেই চাষাবাদ করছেন এই দেশীয় ফলটি।
নরসিংদী জেলার বেলাবো ও শিবপুর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি লটকনের চাষ হয়ে থাকে। গত ৩০ বছরে এখানে লটকনের ব্যাপক সম্প্রসারণ হয়েছে। এই দুই উপজেলার প্রায় প্রতিটি কৃষি পরিবারের আয়ের একটি উৎস লটকন চাষ। এখানকার লাল রঙের উঁচু মাটিতে প্রচুর ক্যালসিয়াম ও অন্যান্য খনিজ থাকায় এখানকার মাটি লটকন চাষের জন্য উপযোগী।
স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির ফলে দেশে স্থানীয় এই ফলটির চাহিদা বিগত বছরগুলোতে অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। তাছাড়া ২০০৮ সাল থেকেই ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে লটকন রপ্তানি হচ্ছে। এ বছর প্রায় ২ হাজার মেট্রিক টন লটকন রপ্তানি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। যা থেকে ২ শত কোটি টাকা মূল্যের বৈদেশিক মুদ্রা আয় হবে।
দেশী ফল লটকন সহজে চাষ করা যায়। বহুবর্ষজীবী এই গাছ বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে রোপনের উপযুক্ত সময়, ভাদ্র আশ্বিন মাসেও লাগানো যায়। প্রতি বছর মাঘ-ফাল্গুন মাসে ফুল আসে এবং জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষে পাকে। দেশী এই ফল গাছে বিশেষ পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না। রোগবালাই কম হয়। নিয়মিত জৈবসার প্রয়োগে ভাল ফলন আসে।
লটকনে প্রচুর ভিটামিন সি, আয়রন, ক্যালসিয়াম ও এন্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এই ফল রুচি বাড়াতে ও মানসিক অবসাদ দূর করতে সহায়তা করে। আর্থ্রাইটিস, পাকস্থলীর আলসার ও ত্বকের নানা সমস্যা দূর করে।