রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ৭২ বিলিয়ন ডলার

রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ৭২ বিলিয়ন ডলার

অর্থনৈতিক প্রতিবেদন: চলতি অর্থবছরের (২০২৩-২৪) জন্য পণ্য ও সেবা রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ৭২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে পণ্য রপ্তানিতে আয় ধরা হয়েছে ৬২ বিলিয়ন ডলার ও সেবা রপ্তানি আয় ১০ বিলিয়ন ডলার। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ আয়ের লক্ষ্য ঠিক করেছে। এটি আগের অর্থবছরের (২০২২-২৩) লক্ষ্যের চেয়ে ১১.৫২ শতাংশ বেশি। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বুধবার এক ব্রিফিংয়ে এ ঘোষণা দেন।
তবে তিনি শঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন-গ্যাস, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহে ঘাটতি থাকলে এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে না। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ব্রিফিং শেষে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, অতিরিক্ত মূল্য পরিশোধ করেও নিয়মিত গ্যাস পাচ্ছি না। বিদ্যুৎ, জ্বালানি তেল ও রাজস্বসংক্রান্ত জটিলতা না কাটলে এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে না। সেখানে আরও বলা হয়-ভিয়েতনাম, চীন থেকে অনেক বায়ার বাংলাদেশে আসতে চাচ্ছেন। তারা জানতে চাচ্ছেন আমরা প্রস্তুত কিনা। আমাদের রপ্তানি আয় বাড়াতে হলে প্রস্তুত থাকতে হবে।
নির্বাচনি বছরে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব কিনা জানতে চাইলে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন স্বাভাবিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে সংবিধান অনুযায়ী হবে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে কোনো কিছুই বন্ধ থাকবে না। অফিস-আদালত, ব্যাংক-বিমা, ব্যবসা-বাণিজ্য স্বাভাবিকভাবেই চলবে। অতএব, নির্বাচনের বছর উপলক্ষ্যে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কোনো বিরূপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কা নেই। তবে খেয়াল রাখতে হবে, আন্দোলনের নামে শিল্পকারখানায় যেন কেউ আগুন না দেয়।
জানা গেছে, পণ্য রপ্তানিতে যে ৬২ বিলিয়ন ডলার আসবে, তাতে প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ১১ দশমিক ৫৯ শতাংশ। আর ১১ দশমিক ১১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে সেবা রপ্তানি থেকে ১০ বিলিয়ন ডলার আয়ের আশা করা হচ্ছে।
২০২২-২৩ অর্থবছরে ৫৮ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়। সেখানে আয় করা গেছে ৫৫ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলার। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
নতুন অর্থবছরের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এই লক্ষ্যমাত্রা ‘উচ্চাভিলাষী’ এতে কোনো সন্দেহ নেই। বৈশ্বিক প্রতিক‚লতার পরেও ভালো ফলাফল এসেছে। গত বছর কিন্তু গ্যাসের সমস্যা হয়েছে, গ্যাসের দাম বেড়েছে। এমন সমস্যার পরও তারা ভালো অর্জন করেছে। গত বছরের টার্গেট অর্জন করতে না পারলেও তার আগের বছরের চেয়ে বেশি অর্জন হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এখন মূল চ্যালেঞ্জ হচ্ছে শিল্প খাতে গ্যাস ও বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ। সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, চলতি অর্থবছরে যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তা অর্জন করা সম্ভব। আমাদের এ বক্তব্যের সঙ্গে ব্যবসায়ীরা একমত পোষণ করেছেন। রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা গ্যাস-বিদ্যুৎ-জ্বালানিসহ অন্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।
বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ অনুষ্ঠানে বলেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে পরিকল্পনামাফিক নতুন রপ্তানি বাজারে বাংলাদেশের অবস্থান শক্তিশালী হলেও পণ্য রপ্তানিতে বৈচিত্র্য আসেনি।

editor

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *