স্বাগত ২০২৩
নববর্ষ উদ্যাপন মানবসভ্যতার অনুষঙ্গ। গ্রেগরিয়ান দিনপঞ্জি অনুযায়ী দুনিয়া জুড়ে নববর্ষ উদযাপন হয়েছে। প্রতিটি মানুষের জীবনে নতুন বছরটি বিশেষ তাৎপর্যের দাবিদার। নতুন বছরে পা দিয়ে মানুষ শপথ নেয় আগত দিনগুলোকে সুন্দরভাবে সাজানোর; বিদায়ী বছরের যা কিছু ভুলত্রুটি, যা কিছু গ্লানিময় পরিহার করার। শুধু ব্যক্তিজীবন নয়, জাতীয়ভাবেও নতুন বছরটি ইতিবাচক হয়ে দেখা দেবে এমনটিই আশা করা হয়। বাংলাদেশের জন্য বিদায়ী বছরটি ছিল নানাক্ষেত্রে জাতীয় অর্জনের। বিদায়ী বছরে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু উদ্বোধনের কৃতিত্ব দেখিয়েছে বাংলাদেশ। মেট্রোরেল যুগে ঘটেছে দেশের পদার্পণ। এ সাফল্য সত্তে¡ও বিশ্ববাসীর পাশাপাশি বাংলাদেশের মানুষ ২০২৩ সালকে বরণ করছে পাহাড়সম আশঙ্কা নিয়ে। জাতিসংঘ বলেছে ২০২৩ সাল হতে পারে খাদ্যাভাব ও দুর্ভিক্ষের বছর। একই আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফসহ নেতৃস্থানীয় অর্থনৈতিক সংস্থাগুলো। করোনার মহাদুর্যোগ কাটিয়ে না উঠতেই রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্বকে খাদ্যাভাবের বিপদের দিকে ঠেলে দিয়েছে। অর্থনৈতিক সংকট সবদেশের জন্য নিয়তির লিখন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ইতিহাসের বিবেচনায় বাঙালি এক প্রাচীন জাতি। গাঙ্গেয় বদ্বীপের অধিবাসীদের রয়েছে ৫ হাজার বছরের ঐতিহ্য। আমাদের আধুনিক ইতিহাস ও অহংকার করার মতো। প্রকৃতি উদারভাবে আমাদের দান করেছে উর্বর মাটি। এমাটিতে বীজ বুনলেই সহজে ভরে যায় ফসলের মাঠ। এদেশের নদ-নদী, খাল-বিল, হাওর-বাঁওড় যতœ পেলে সোনার খনিতে রূপান্তরিত হয়। মানবসম্পদে সমৃদ্ধ এদেশকে দরিদ্র বলার অবকাশ নেই। বাংলাদেশের মানুষ প্রতিকূল অবস্থা জয় করার সাহসও রাখে। প্রকৃতি আমাদের সেভাবেই সৃষ্টি করেছে। আমাদের রয়েছে পরিশ্রমী মানুষ। ঐক্যবদ্ধভাবে প্রয়াস চালালে সময়ের সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে জাতিকে সমৃদ্ধ বিশ্বের কাতারে নিয়ে যাওয়া কঠিন কিছু নয়। তবে এজন্য দরকার জাতীয় ঐক্য। দরকার হীনমন্যতা ঝেড়ে ফেলে শির দাঁড়া সোজা করা। দরকার পারস্পরিক সহনশীল পরিবেশ। এজন্য শুদ্ধ গণতান্ত্রিক চেতনায় আত্মস্থ হতে হবে। নতুন বছরে দেশে গণতন্ত্রচর্চা ও বহুমতের সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে। গড়ে তুলতে হবে সুদৃঢ় ঐক্য। গ্রেগরিয়ান নববর্ষে দেশ ও বিশ্ববাসীকে আমাদের শুভেচ্ছা।