পাবনা সংবাদদাতা: নোবেল শান্তি পুরস্কার, ২০২৩-এর জন্য মনোনীত হয়েছেন পাবনার ঈশ্বরদীর কৃতীসন্তান ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) সাবেক শিক্ষার্থী ডা. রায়ান সাদী। তিনি ১৯৬৪ সালের ৬ ডিসেম্বর ঈশ্বরদী উপজেলার সাহাপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা তৈয়ব হোসেন, মা আসমা বেগম। তিনি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। তাঁর ডাকনাম শাহিন।
সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি তাঁর ফেসবুক ভেরিফায়েড পেজে এ তথ্য নিশ্চিত করার পর পাবনা ও ঈশ্বরদীতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি ভাইরাল হয়ে যায়। সবাই নিজ এলাকার সন্তান ডা. রায়ান সাদীর জন্য শুভকামনা করে ফেসবুকে পোস্ট দিচ্ছেন।
ফেসবুক স্ট্যাটাসে ডা. দীপু মনি লিখেছেন, ‘আমাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজের কে-৪০ ব্যাচের বন্ধু রায়ান সাদী এমডি, এমপিএইচ, চেয়ারম্যান ও সিইও টেভোজেন বায়ো, নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন। আমরা গর্বিত। সাদীর প্রতি প্রাণঢালা অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা। সাদী ও তাঁর পরিবারের প্রতি নিরন্তর শুভকামনা।’ এর আগে রায়ান সাদী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম লিঙ্কডইনে তাঁর প্রোফাইলে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হওয়ার তথ্য দেন।
ডা. রায়ান সাদী বর্তমানে টেভোজেন বায়ো নামে একটি কোম্পানির চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী। স্বাস্থ্য খাতে অসমতা থেকে সৃষ্ট দুর্ভোগ লাঘবের লক্ষ্য নিয়ে টেভোজেন বায়োর যাত্রা। ক্লিনিক্যাল পর্যায়ে এ কোম্পানি কভিড-১৯, ক্যান্সার ও অন্যান্য ভাইরাস সংক্রমণের জন্য ‘টি সেল ইমিউনোথেরাপি’ উদ্ভাবন নিয়ে কাজ করছে…
ডা. রায়ান সাদী বর্তমানে টেভোজেন বায়ো নামে একটি কোম্পানির চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী হিসেবে কর্মরত আছেন। স্বাস্থ্য খাতে অসমতা থেকে সৃষ্ট দুর্ভোগ লাঘবের লক্ষ্য নিয়ে টেভোজেন বায়োর যাত্রা। ক্লিনিক্যাল পর্যায়ে এ কোম্পানি কভিড-১৯, ক্যান্সার ও অন্যান্য ভাইরাস সংক্রমণের জন্য ‘টি সেল ইমিউনোথেরাপি’ উদ্ভাবন নিয়ে কাজ করছে। রায়ান সাদীর ফুফাতো ভাই কামরুজ্জামান পান্না বলেন, ‘আমার বড় মামার ছেলে রায়ান সাদী। মামা তৈয়ব হোসেন কর্মজীবনে জয়পুরহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও ঈশ্বরদী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন। তবে কর্মজীবনের বেশির ভাগ কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে অতিবাহিত করেছেন। মামি আসমা বেগম কুষ্টিয়ার চাঁদ সুলতান বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ছিলেন। এক ভাই এক বোনের মধ্যে রায়ান সাদী বড়, তার ছোটবোন রুপা মাহমুদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে শিক্ষাজীবন শেষ করে এখন গৃহিণী।’ রায়ান সাদী কুষ্টিয়া জিলা স্কুল থেকে এসএসসি ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস শেষে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি থেকে চিকিৎসাবিজ্ঞানে লিডারশিপ, ইয়েল ইউনিভার্সিটি থেকে হেলথ পলিসি ও অর্থনীতিতে উচ্চতর ডিগ্রি গ্রহণ করেন।
রায়ান সাদী ১৯৯৫ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের নেভাডায় চার্চিল কমিউনিটি হাসপাতালে এপিডেমিওলোজি বিভাগের পরিচালক ছিলেন। ১৯৯৮ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত ছিলেন সিভিএস হেলথ কোম্পানি ইটনার মানোন্নয়ন বিভাগের পরিচালক। ২০০১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত কাজ করেছেন সানোফি জেনজিমে। এরপর ১০ বছর তিনি কাজ করেছেন জনসন অ্যান্ড জনসনে। ২০১২-এর আগস্ট থেকে ২০১৮-এর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রায়ান সাদী সেখানে ক্যান্সার বিষয়ে মার্কেট অ্যাকসেস অ্যান্ড পলিসি বিভাগের বৈশ্বিক প্রধান ছিলেন। ২০১০, ২০১৩ ও ২০১৭ সালে তিনি তিন মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বিশেষ কর্মী হিসেবে নিয়োগ পান।
তাঁর এ মনোনয়নে পাবনা তথা তাঁর নিজ এলাকা ঈশ্বরদীতে আনন্দের জোয়ার বইছে। এলাকাবাসী চান তাদের ছেলে পৃথিবীর সর্বোচ্চ এ সম্মান বয়ে আনুক। তারা গর্বিত তাঁকে নিয়ে।