দক্ষিণ এশিয়ায় কর্মসংস্থান প্রবৃদ্ধি অর্ধেক কমবে: আইএলও
দেওয়ানবাগ ডেস্ক: বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ে একের পর এক হতাশাজনক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো। বৈশ্বিক মন্দার শঙ্কা অনেক বেশি, আর তা না হলেও প্রবৃদ্ধি কমবে। এর প্রভাব পড়বে কর্মসংস্থানেও। এরই মধ্যে বহুজাতিক অনেক প্রতিষ্ঠান ব্যয় কমাতে কর্মী ছাঁটাই করছে।
এবার আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থাও (আইএলও) জানাচ্ছে এ বছর কর্মসংস্থান প্রবৃদ্ধি কমার কথা। গত সোমবার প্রকাশিত ‘ওয়ার্ল্ড এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল আউটলুক : ট্রেন্ডস ২০২৩’ শীর্ষক প্রতিবেদনে আইএলও জানায়, চলতি বছর দক্ষিণ এশিয়ার কর্মসংস্থানের প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াবে ১.৬ শতাংশ, যা গত বছর ছিল ৩ শতাংশ। অর্থাৎ কর্মসংস্থান প্রবৃদ্ধি অর্ধেক কমে যাবে। দক্ষিণ এশিয়ায় বেকারের সংখ্যা দাঁড়াতে পারে পাঁচ কোটি ৪১ লাখ, যা গত বছরের তুলনায় ২.৪৬ শতাংশ বেশি। আইএলও বলছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও ঋণের প্রবৃদ্ধির হার কমে যাওয়ার কারণে পরিস্থিতির এই অবনতি হবে।
সংস্থা জানায়, ২০২৩ সালে বৈশ্বিক কর্মসংস্থানের প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াতে পারে মাত্র ১ শতাংশ। অর্থাৎ এ বছর সারা বিশ্বে বেকার তরুণের সংখ্যা প্রাক-মহামারি সময়ের নির্ধারিত মানদণ্ডের চেয়ে প্রায় এক কোটি ১৬ লাখ বেশি থাকবে।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানির মূল গন্তব্য ইউরোপ। কিন্তু সেখানে মন্দাভাব থাকায় বাংলাদেশসহ এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে প্রভাব থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আইএলও। শ্রমবাজারে শ্লথগতির কারণে পারিবারিক ব্যয় সেভাবে বাড়বে না। দেশের ভেতরে ও দেশে দেশে বৈষম্য বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সে কারণে মহামারির প্রভাব কাটিয়ে যে উঠতে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার হচ্ছে, তা খুবই অসম।
প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছর দক্ষিণ এশিয়ায় প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াতে পারে ৫.৩ শতাংশ। ভারতের উচ্চ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাসের কারণে এই অঞ্চলের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস মন্দ নয়। তবে ভারতের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস এরই মধ্যে এক দফা কমানো হয়েছে। বৈশ্বিক পরিস্থিতির পাশাপাশি দেশটির আর্থিক খাতে মাত্রাতিরিক্ত কড়াকড়ির কারণে এর প্রবৃদ্ধির হার কিছুটা কমতে পারে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক না থাকলেও এই অঞ্চলে বিশ্ববাজারের প্রভাব যে কতটা, তা গত এক বছরে বোঝা গেছে। বিশেষ করে জ্বালানির দাম বাড়লে পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হতে পারে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। জ্বালানি খাতে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মতো দেশের সরকারকে বিপুল ভর্তুকি দিতে হয়। এতে রিজার্ভে চাপ পড়ে। ঝুঁকির খাত হিসেবে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের বিস্তীর্ণ সমতল ভূমি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পাকিস্তানে গত বছর প্রলয়ংকরী বন্যা হয়েছে।