সোয়া কোটি মানুষের বাস্তুচ্যুতির শঙ্কা
দেওয়ানবাগ ডেস্ক: জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশে চলতি বছর ৭১ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে ২০৫০ সাল নাগাদ দেশে এক কোটি ৩৩ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হতে পারে। গত সোমবার দুপুরে রাজধানীর বনানীতে শেরাটন হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাবিøউএইচও)।
ডাবিøউএইচওর উদ্যোগে পাঁচ দিনব্যাপী তৃতীয় গ্লোবাল স্কুল অন রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেন্ট হেলথ শীর্ষক অনুষ্ঠান উপলক্ষে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, চলতি বছর জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ৭.১ মিলিয়নেরও বেশি বাংলাদেশি বাস্তুচ্যুত হয়েছে, যা ২০৫০ সালের মধ্যে ১৩.৩ মিলিয়নে পৌঁছতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তন, ক্রমবর্ধমান বৈষম্য, দ্ব›দ্ব, বাণিজ্য এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধি এই বাস্তুচ্যুত ও অভিবাসন সমস্যা বাড়াচ্ছে।
১৯৭৮ সাল থেকে বাংলাদেশ তিনটি বড় ধরনের অভিবাসী সমস্যা প্রত্যক্ষ করেছে। এ ক্ষেত্রে মিয়ানমারের নাগরিকদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে, যাদের প্রত্যেকের খাবার, চিকিৎসা ও বসবাসের ব্যবস্থার প্রয়োজন রয়েছে। শরণার্থী ও অভিবাসী স্বাস্থ্য সমস্যা মোকাবেলা, পেশাদার দক্ষতা ও সক্ষমতা গড়ে তোলার জন্য দেশ ও অঞ্চলগুলোকে সহায়তা করতে পাঁচ দিনব্যাপী এই আয়োজন করা হচ্ছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানায় ডাবিøউএইচও।
বাস্তুহীন ও অভিবাসীদের স্বাস্থ্য ও অভিবাসন কর্মসূচির পরিচালক সান্তিনো সেভেরোনি বলেন, বার্ষিক গ্লোবাল স্কুল অন রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেন্ট হেলথ হচ্ছে ডাবিøউএইচও হেলথ অ্যান্ড মাইগ্রেশন প্রগ্রামের একটি ফ্ল্যাগশিপ এবং প্রচারের জন্য গ্লোবাল অ্যাকশন প্ল্যান। এর বাস্তবায়ন উদ্বাস্তু ও অভিবাসী স্বাস্থ্য সম্পর্কিত আঞ্চলিক ও দেশীয় অফিসগুলোর সঙ্গে কৌশলগত ও অপারেশনাল সহযোগিতা জোরদারে একটি বড় সুযোগ।
ডাবিøউএইচও মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গেব্রিয়েসাস বলেন, অভিবাসন ও বাস্তুচ্যুতি শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ও সুস্থতার ওপর গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে। এ ছাড়া সাংস্কৃতিক ও ভাষাগত পার্থক্য, আর্থিক বাধা, কুসংস্কার ও বৈষম্য সবই উদ্বাস্তু ও অভিবাসীদের জন্য স্বাস্থ্য পরিষেবার অংশগ্রহণকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
ডাবিøউএইচওর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক পুনম ক্ষেত্রপাল সিং বলেন, স্বাস্থ্যের অধিকার সর্বত্র সব মানুষের জন্য সমান, বিশেষ করে উদ্বাস্তু ও অভিবাসীদের জন্য এটা প্রসারিত।
রোহিঙ্গা প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ডাবিøউএইচওর আঞ্চলিক পরিচালক বলেন, বাংলাদেশ শুধু তাদের বিনা মূল্যে স্বাস্থ্যসেবার সুবিধাই দেয়নি, আরো অনেক কিছু করেছে।
পাঁচ দিনব্যাপী এই আয়োজনের বিভিন্ন পর্যায়ে গবেষক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, বেসরকারি সংস্থা, যুব প্রতিনিধি ও গণমাধ্যমকর্মীরা অংশ নেবেন।