আরবি আবদুন শব্দ থেকে ইবাদত শব্দের উৎপত্তি। আবদুন অর্থ বান্দা বা দাস। আর ইবাদত শব্দের অর্থ ইবাদত করা, বন্দেগি বা দাসত্ব করা। আল্লাহ বলেন- “ওয়ামা খালাক্বতুল জিন্না ওয়াল ইনসা ইল্লা লিইয়া’বুদূন।” অর্থাৎ আমি সৃষ্টি করেছি জিন এবং মানুষকে এ কারণে, তারা আমারই ইবাদত করবে। (সূরা আঝ ঝারিয়াত ৫১: আয়াত ৫৬)
প্রকৃতপক্ষে মহিমান্বিত আল্লাহর পরিচয় লাভ করে, তাঁর উপর পূর্ণ আত্মসমর্পণের মাধ্যমে মানুষ আল্লাহর বান্দা বলে গণ্য হয়। আর এ অবস্থায় আল্লাহর নির্দেশে পরিচালিত হয়ে মানুষ যে কাজসমূহ করে, এটিই ইবাদত বলে গণ্য হয়। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে, হযরত ঈসা (আ.) তাঁর সম্প্রদায়কে বলেছিলেন- “তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং আমার অনুসরণ করো। নিশ্চয় আল্লাহই আমারও প্রতিপালক এবং তোমাদেরও প্রতিপালক। অতএব তোমরা তাঁরই ইবাদত করো। আর এটিই হলো সরল-সঠিক পথ।” (সূরা আঝ ঝুখরুফ ৪৩: আয়াত ৬৩ ও ৬৪) আসলে ইবাদত কবুল হওয়ার জন্য মানুষকে নবুয়তের যুগে নবি ও রাসুল এবং নবুয়ত পরবর্তী বেলায়েতের যুগে যুগের ইমাম, মোজাদ্দেদ ও আওলিয়ায়ে কেরামের আনুগত্য স্বীকার করতে হয়। অর্থাৎ সমকালীন যুগের মহামানবের তাওয়াজ্জোহ নিয়ে আত্মার কুরিপুসমূহ দূর করতে হয়। এ কারণে সুমহান আল্লাহ্ বলেন- “হে মু‘মিনগণ! তোমরা আনুগত্য করো আল্লাহর, আনুগত্য করো রাসুলের এবং আনুগত্য করো তাঁদের, তোমাদের মধ্যে যাঁরা (আল্লাহর সাথে যোগাযোগ করে) ফয়সালা দিতে পারেন।” (সূরা আন নিসা ৪: আয়াত ৫৯) প্রকৃতপক্ষে নবুয়ত পরবর্তী বেলায়েতের যুগে মানুষ যখন নুরে মোহাম্মদীর ধারক অলী-আল্লাহর আনুগত্য স্বীকার করে এবং এ মহামানবের তাওয়াজ্জোহ নিয়ে আত্মার কুরিপুসমূহ দূর করতে সক্ষম হয়, তখনই মানুষের মানবাত্মা শক্তিশালী হয়ে উঠে। আর সাধনার এ পথ ধরেই মানুষ আল্লাহর পরিচয় লাভ করে। এ স্তরে উন্নীত মানুষকে সকল কাজেই আল্লাহর ইচ্ছায় পরিচালিত হতে হয়। আর তখন তার যাবতীয় কর্মই ইবাদত বলে গণ্য হবে।