ড. মোবারক হোসেন
মহান রাব্বুল আলামিন মানবজাতিকে আশরাফুল মাখলুকাত হিসেবে সৃষ্টি করে তাঁর প্রতিনিধি মনোনীত করে এ পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন। তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি হিসেবে মানুষকে পাঠিয়েছেন। সৃষ্টিজগতের মাঝে আল্লাহর প্রতিনিধিত্ব করার জন্যই আল্লাহ্ মানুষকে এ শ্রেষ্ঠত্ব দিয়ে জগতে প্রেরণ করেছেন। মানুষ সামাজিক জীব। মানুষ একে অপরের সাথে পরিচিত হবে এবং অন্যের কল্যাণ সাধন ও উপকার করবে। মানুষ মাত্রই শান্তি প্রত্যাশী। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মানুষ শান্তি লাভের জন্য সংগ্রাম করে যাচ্ছে, কিন্তু শান্তির সন্ধান পাচ্ছে না। পৃথিবী ক্ষণস্থায়ী। মানুষ বাহ্যিকভাবে ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করে নিজেদেরকে ধার্মিক হিসেবে পরিচিত করে, কিন্তু তাদেরকেও পাপ কাজে লিপ্ত হতে দেখা যায়। মানুষের বৈশিষ্ট্য এমন হওয়া উচিত যে, তারা আল্লাহর নিকট পূর্ণ আত্মসমর্পণকারী এবং নিজেরা শান্তিতে বসবাসকারী ও অন্যসকল সৃষ্টিকে শান্তিতে বসবাসের জন্য সুযোগ সৃষ্টিকারী। কুরিপুর তাড়নায় লোভ, স্বার্থপরতা এবং কলহ মানুষকে কলুষিত করে। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) হতে বর্ণিত হয়েছে হযরত রাসুল (সা.) বলেন-“মুসলমান সেই ব্যক্তি, যার জবান ও হাত থেকে অপর মানুষ নিরাপদ থাকে।” (বোখারী ও মুসলিম শরীফের সূত্রে মেশকাত শরীফ, পৃষ্ঠা ১২) মানুষ তার শ্রেষ্ঠত্ব হারিয়ে যখন নিকৃষ্ট জীবের আচরণ করে, স্বাভাবিকভাবেই পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে দুঃখ ও অশান্তি নেমে আসে।
হযরত উকবা ইবনে আমের (রা.) হতে বর্ণিত হয়েছে তিনি বলেন- “আমি বললাম- হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! মুক্তির উপায় কী? হযরত রাসুল (সা.) বললেন, তোমার জবানকে সংযত রাখো, নিজের ঘরকে প্রশস্ত করো এবং কৃত অপরাধের জন্য ক্রন্দন করো।” (তিরমিজী শরীফের সূত্রে রিয়াদুস সালেহীন ৪র্থ খণ্ড, পৃষ্ঠা ২৬, হাদিস নং-১৫২১) মানুষের মাঝে আল্লাহর প্রতিনিধির গুণাবলির বিকাশ ঘটিয়ে, আত্মার উন্নতির মাধ্যমে শ্রেষ্ঠ মানুষ হিসেবে নিজেকে সমাজে প্রতিষ্ঠা লাভ করতে পারে। পবিত্র কুরআনে মহান রাব্বুল আলামিন বলেন- “হে আল্লাহ্! আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই। আমাদের সরল পথ দেখান (সেই মহামানবদের পথ) যাদের প্রতি আপনার করুণা বর্ষণ করেছেন এবং ওই পথ নয় যাদের প্রতি আপনি রুষ্ট এবং ক্রোধান্বিত। (সূরা ফাতিহা ১: আয়াত ৪ থেকে ৭)
আল্লাহর নির্দেশিত পথে নিজেকে পরিচালিত করে, নিজ আত্মায় আল্লাহর পরিচয় খুঁজে পেয়েছেন, তিনি আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আত্মসমর্পণকারী মুসলমান হতে সক্ষম হয়েছেন। প্রকৃত মুসলমান জন্মসূত্রে হওয়া যায় না। প্রকৃত মুসলমান না হয়ে ব্যবহারিক ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনের মাধ্যমে নিজ জীবনে, কিংবা সামাজিক জীবনে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। প্রকৃত মুসলমানের আত্মা পরিশুদ্ধ আত্মা, যা কুরিপুকে বশীভূত করে নিজের মাঝে একমাত্র আল্লাহর প্রভুত্ব কায়েম করেছে। পাপমুক্ত আত্মা, সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার সহায়ক। আল্লাহ্ বলেন “নিশ্চয় সাফল্য লাভ করবে সে, যে আত্মশুদ্ধি লাভ করে এবং সে স্বীয় প্রতিপালকের নাম স্মরণ করে ও নামাজ আদায় করে।” (সূরা আল আ’লা ৮৭: আয়াত ১৪ ও ১৫)
অন্য এক আয়াতে আল্লাহ্ বলেন- “হে মু’মিনগণ! তোমরা আনুগত্য করো আল্লাহর, আনুগত্য করো রাসুলের এবং আনুগত্য করো তাঁদের, যাঁরা তোমাদের মধ্যে (আল্লাহর সাথে যোগাযোগ করে) ফয়সারা দিতে পারেন।” (সূরা নিসা ৪: আয়াত ৫৯) এরূপ মহামানবের সহবত লাভকারীরা সাধনার মাধ্যমে চরিত্র সংশোধন করত প্রভুর ইচ্ছায় নিজেকে পরিচালিত করতে পারে। এ যোগ্যতা অর্জনকারী নিজে প্রকৃত শান্তি অনুভব করতে সক্ষম। আল্লাহ্ প্রদত্ত এ শান্তির পথে পরিচালিত ব্যক্তিই মূলত সিরাতুল মুস্তাকিমে পরিচালিত। মহান রাব্বুল আলামিনের অপার দয়ায় এ পথের পথিকরাই চিরশান্তি ও মুক্তি লাভের লক্ষ্যস্থলে পৌঁছতে সমর্থ হয়। এরূপ ব্যক্তির মাধ্যমে সমাজের যাবতীয় অনাচার এবং পাপাচার দূরীভূত হয়ে সমাজে প্রকৃত শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়।
যারা ষড়রিপুর তাড়নায় আল্লাহর উপর আত্মসমর্পণের পরিবর্তে আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়েছে, তারা আল্লাহর নির্দেশিত পথকে উপেক্ষা করে, নিজেদের মনগড়া অসংখ্য মতবাদের সৃষ্টি করে, সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা করার প্রত্যাশা করছে! কিন্তু মানুষের এ প্রচেষ্টায় সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার পরিবর্তে আত্মকলহ, সংঘাত ও পারস্পরিক হানাহানির সৃষ্টি হচ্ছে। মানুষ যখন নিজেদের ভ্রান্ত মতবাদকে বাদ দিয়ে আল্লাহর মনোনীত মহামানব তথা নবি-রাসুলের কাছে বাইয়াত গ্রহণ করে আল্লাহর বন্ধুর নির্দেশিত পথে পরিচালিত হয়ে আল্লাহর চরিত্রে চরিত্রবান হতে সক্ষম হবে, তখনই সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। মহান আল্লাহ্ বলেন- “নিশ্চয় আমি বনি আদমকে মর্যাদা দান করেছি এবং আমি তাদেরকে স্থলভাগে ও জলভাগে চলাচলের বাহন দান করেছি। আর আমি তাদেরকে দিয়েছি নানাবিধ উত্তম জীবনোপকরণ এবং আমি তাদেরকে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি আমার অনেক সৃষ্টি অপেক্ষা।” (সূরা বনী ইসরাঈল ১৭: আয়াত ৭০)
হাদিসে কুদসিতে মহান আল্লাহ্ বলেন- “আমার বান্দা নফল ইবাদত দ্বারা আমার এতো নিকটবর্তী হয়ে যায়, আমি তাকে ভালোবাসতে বাসতে তার কর্ণ হয়ে যাই, যে কর্ণ দ্বারা সে শুনে; চক্ষু হয়ে যাই, যে চক্ষু দ্বারা সে দেখে; হাত হয়ে যাই, যে হাত দ্বারা সে ধরে, এবং পা হয়ে যাই, যে পা দ্বারা সে হাঁটে। এমন বান্দা কোনো বিষয়ে প্রার্থনা করা মাত্র আমি তা দান করে থাকি এবং কোনো বিষয়ে আমার কাছে আশ্রয় চাওয়া মাত্র তাঁকে আশ্রয় দিয়ে থাকি।” (বোখারী শরীফ ২য় খণ্ড, পৃষ্ঠা ৯৬৩, তাফসীরে মাজহারী ১ম খণ্ড ৫৮ পৃষ্ঠা: মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক, ১০ম খণ্ড, ১৯৮ পৃষ্ঠা; বোখারী শরীফের সূত্রে মেশকাত শরীফ, পৃষ্ঠা ১৯৭)
আল্লাহর রাসুল (সক্ষ) এরশাদ করেন- “তোমাদের মধ্যে উত্তম ঐ ব্যক্তি, যার চরিত্র সবচেয়ে উত্তম।” (বোখারী ও মুসলিমের সূত্রে মেশকাত শরীফ, পৃষ্ঠা ৪৩১) মহান আল্লাহ্ ও তাঁর রাসুল (সা.)-এর বাণী মোবারকে বিষয়টি সুস্পষ্ট যে, উত্তম চরিত্রগুণে আল্লাহর প্রতিনিধিত্বকারী মানুষ ফেরেশতার চেয়েও বেশি মর্যাদাশীল, আবার অসচ্চরিত্রের দ্বারা সেই মানুষই পশুর চেয়ে নিকৃষ্ট হয়ে থাকে। উপমাস্বরূপ বলা যায়- দুধ, পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ একটি উৎকৃষ্ট খাদ্য। দুধের মাঝে যখন এক ফোঁটা চনা পড়ে, তখন এ দুধ পান করলে এ দুধই মৃত্যুর কারণ হতে পারে। সুতরাং চরিত্রই ধর্মের মূল যার চরিত্র নেই, তার কোনো ধর্ম নেই।
আল্লাহ্ পাক রাসুলে খোদা (সা.)-কে মানব সমাজে প্রেরণ করেছেন পাপীতাপী মানুষকে পাপসাগর থেকে উদ্ধার ও পথভ্রষ্ট মানুষকে সঠিক পথের সন্ধান দেওয়ার জন্য, আল্লাহ্ ও রাসুল (সা.)-এর প্রতি গভীর বিশ্বাস স্থাপন করাতে। তাই প্রত্যেককে মু’মিন হওয়ার জন্যে কালেমা তাইয়্যেবা পাঠ করতে হয় এবং অন্তরে এ বিশ্বাস দৃঢ়ভাবে স্থাপন করতে হয় যে, আল্লাহ্ ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই এবং মোহাম্মদ (সা.) তাঁর প্রেরিত রাসুল। যারা রাসুল (সা.)-এর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে ও তাঁর উপর প্রদত্ত বিধানের অনুসরণ করে, তারাই প্রকৃত মু’মিন। যারা প্রকৃত মু’মিন, তারা নবিজিকে নিজেদের জীবন ও পিতা-মাতার চেয়েও বেশি ভালোবাসেন। এর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত সাহাবায়ে কেরাম। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ্ ঘোষণা করেন- “নবি মু’মিনদের নিকট তাহাদের নিজেদের অপেক্ষা ঘনিষ্ঠতর।” (সূরা আহযাব ৩৩: আয়াত ৬) মু’মিনগণ নিজেদের জীবনের চেয়ে রাসুল (সা.)-কে বেশি ভালোবাসেন।
মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে হযরত রাসুল (সা.)-এর রহমতের পরশ পেয়েই বিশ্বভুবনের প্রতিটি সৃষ্টি এমনকি অণু-পরমাণু আপন আপন রূপ-সৌন্দর্য ও গুণাগুণ বিকশিত করছে। এক মুহূর্তের জন্য যদি কোনো সৃষ্টি এ রহমতের পরশ থেকে বঞ্চিত হয়, তবে তার অস্তিত্বের অবসান ঘটে। তাঁর সাথে মহান আল্লাহর কত গভীর সম্পর্ক যে, বিশ্বজাহানের মহাধিপতির এ সুবিশাল রাজত্বে তিনি একচ্ছত্র রহমত বিতরণের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। হযরত রাসুল (সা.) বলেন, আল্লাহ্ সর্বপ্রথম আমার নুরকে সৃষ্টি করেছেন। আমি আল্লাহর নুর হতে, আর সমস্ত বস্তু আমার নুর হতে। হযরত রাসুল (সা.)-কে স্বীয় সমস্ত গুণাবলিতে বিভূষিত করে আপন পরিচয় প্রকাশ করার জন্য এ সৃষ্টিজগৎ সৃজন করেছেন বলেই আল্লাহ্ তায়ালা হাদিসে কুদসিতে এরশাদ করেন- লাও লাকা লামা খালাকতুল আফলাক। (তাফসীরে মাজহারী, পৃষ্ঠা ২৮০)
মোহাম্মদী ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক হযরত রাসুল (সা.)-এর চরিত্র দেখে তৎকালীন যুগের বিধর্মীরাও ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় নিয়ে তাদের জীবনকে করেছে শান্তিময় এবং চরিত্রকে করেছে নক্ষত্রতুল্য। আল্লাহ্ তায়ালা সৃষ্টির শুরু থেকে আজ অবধি পাপি-তাপি মানুষকে সিরাতুল মুস্তাকিম তথা আলোর পথে আনার জন্য দুনিয়াতে অসংখ্য মহামানব প্রেরণ করছেন। তাঁরা সমকালীন যুগের মানুষকে আল্লাহ্ তায়ালার সাথে যোগাযোগের শিক্ষা দিয়ে থাকেন। হযরত আদম (আ.) থেকে শুরু করে হযরত রাসূল (সা.) পর্যন্ত যুগে যুগে যত নবি-রাসুলগণ ও নবুয়তপরবর্তী বেলায়েতের যুগে আওলিয়ায়ে কেরাম মানুষকে নুরের আলোয় আলোকিত করার বিধান নিয়ে ধুলির ধরায় আগমন করেছেন। তাদের শিক্ষা আদর্শ গ্রহণ করে সমকালীন যুগের মানুষ শ্রেষ্ঠ জাতি হিসেবে পরিচয় লাভ করেছে। তাদের মত পথকে যারা অনুসরণ করেছে তারাই শ্রেষ্ঠ এবং আলোকিত মানুষ হয়েছে।
তারই ধারাবাহিকতায় আল্লাহর মহান বন্ধু সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহবুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (রহ.) দীর্ঘ ৭১ বছর বাংলাদেশ-সহ সারাবিশ্বে পরিশুদ্ধ ও পরিবর্তনের ডাক দিয়েছিলেন। আল্লাহ্ তায়ালার মহান বাণী জগতের বুকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে নিরলস পরিশ্রম করেছেন। তিনি মানবজাতির নৈতিক অবক্ষয় রোধকল্পে নুরে মোহাম্মদীর দীপশিখা বিশ্ববাসীর মাঝে জ্বালিয়ে প্রমাণ করে দিয়েছেন যে, মোহাম্মদী ইসলাম মানেই আর্দশ চরিত্রের নাম। তাঁর এ শিক্ষা পদ্ধতি শুধু বাংলাদেশ নয় পৃথিবীতে সকল মুক্তি প্রত্যাশী মানুষ গ্রহণ করেছে। নিজেদেরকে পরিবর্তন করার এক আদর্শ শিক্ষা গ্রহণ করে সমাজে, রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রশংশিত হয়েছে। এজন্য সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (রহ.) বলেছেন- “সমাজ ব্যক্তিকে শুদ্ধ করতে পারে না, আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে ব্যক্তি শুদ্ধ হয় আর ব্যক্তিশুদ্ধির মাধ্যমে সমাজ শুদ্ধ হয়।”
সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (রহ.) তাঁর অসংখ্য পবিত্র বাণী মোবারকে, তাঁর লেখনীতে, তাঁর সংস্কারের মাধ্যমে সমাজ এবং সমাজের মানুষকে পরিশুদ্ধ হওয়ার শিক্ষা দিয়েছেন। তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করে প্রায় ৩ কোটি মানুষকে পরিশুদ্ধ হওয়ার শিক্ষা প্রদান করেছেন। অসংখ্য মানুষ তাঁর এ শিক্ষা গ্রহণ করে তাদের পারিবারিক জীবনে, সামাজিক জীবনে, সর্বক্ষেত্রে পরিবর্তন এসেছে। আল্লাহর মহান বন্ধুর এ শিক্ষা পদ্ধতি এখনো চলমান আছে। তাঁর প্রতিষ্ঠিত ১১টি দরবার শরীফ ও অসংখ্য খানকা ও জাকের মজলিসে এ মহান শিক্ষা দেওয়া হয়।
আল্লাহর মহান বন্ধু সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (রহ.) তাঁর ওফাতের আগে তাঁর সম্মানিত মেজো সাহেবজাদা ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুরকে মোহাম্মদী ইসলামের নেতৃত্ব প্রদান করেন এবং মানুষকে পরিশুদ্ধ করার সুমহান দায়িত্ব দিয়েছেন।
ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর প্রতিনিয়ত মানুষকে পরিশুদ্ধ হওয়ার শিক্ষা দিচ্ছেন। কীভাবে ইবাদত করলে একজন মানুষ সহিহ শুদ্ধভাবে নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত ও মোরাকাবা করতে পারবে সে পদ্ধতি শিক্ষা দিচ্ছেন এবং পাপিতাপি মানুষদেরকে মোহাম্মদী ইসলামের সঠিক দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন। তাঁর মহানুভবতা, উদারতা, ভালোবাসা, চিন্তা চেতনা, কর্মদক্ষতা ও ন্যায়পরায়ণতায় মুগ্ধ হয়ে মানুষ দলে দলে মোহাম্মদী ইসলামের ছায়াতলে শামিল হচ্ছে। ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর বলেন- ধর্মের মূলমন্ত্র নিজেকে পবিত্র করা, আলোকিত করা। আমার নিয়ম যদি মানেন, শাহ্ দেওয়ানবাগীর আদর্শ যদি মানেন আপনার কবর আলোকিত হবে। তিনি বলেন, মুরিদের ক্বালবে আল্লাহ্ বাস করেন, কিন্তু ঐ ক্বালব যখন অন্ধকারে থাকে মুরিদ সারাদিন খুঁজলেও নিজের ভিতরে আল্লাহকে খুঁজে পাবে না। তাই প্রত্যেক মুরিদকে, আশেকে রাসুলকে নিজের ভিতরের ঐ অন্ধকার ক্বালবকে আলোকিত করতে হবে। আপনি যদি ঐ অন্ধকার ক্বালবকে আলোকিত করতে পারেন তাহলে আপনি আল্লাহর দিদার পাবেন, রাসুলের দিদার পাবেন, মোর্শেদের দিদার পাবেন৷
আল্লাহ্ তায়ালা সৃষ্টির শুরু থেকে আজ অবধি পাপিতাপি মানুষকে সিরাতুল মুস্তাকিম তথা আলোর পথে আনার জন্য দুনিয়াতে অসংখ্য মহামানব প্রেরণ করছেন। তাঁরা সমকালীন যুগের মানুষকে আল্লাহ্ তায়ালার সাথে যোগাযোগের শিক্ষা দিয়ে থাকেন।
পরিশেষে মহান রাব্বুল আলামিনের পবিত্র কদম মোবারকে প্রার্থনা ইমাম ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুরের নির্দেশনা মেনে নিজেদের কলুষিত আত্মাকে পরিশুদ্ধ করতে পারি এবং মহান আল্লাহর কদম মোবারকে সেজদা দিতে পারি এ প্রার্থনা গোলামের।