যুদ্ধ নয় শান্তি

যুদ্ধ নয় শান্তি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের ৭৭তম অধিবেশনে ভাষণ দানকালে রোহিঙ্গা সমস্যা এবং রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ সম্পর্কে আলোকপাত করেছেন। মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে দেশটিতে চলমান অস্থিরতা ও সশস্ত্র সংঘাত নিরসনে জাতিসংঘের কার্যকর ভূমিকার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের দীর্ঘায়িত উপস্থিতি অর্থনীতি, পরিবেশ, নিরাপত্তা এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। মানব পাচার, মাদক চোরাচালানসহ আন্তসীমান্তঅপরাধ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমনকি তা উগ্রবাদকেও ইন্ধন দিতে পারে। এসংকট প্রলম্বিত হলে তা এ উপমহাদেশসহ বৈশ্বিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলবে। প্রধানমন্ত্রী রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দা এবং খাদ্যসংকটের বিষয়টিও তাঁর বক্তব্যে তুলে ধরেন। বলেন, রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ ও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা-পাল্টা নিষেধাজ্ঞার ফলে সরবরাহ ব্যবস্থায় ব্যাঘাত এবং জ্বালানি, খাদ্যসহ নানাভোগ্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা ইউক্রেন ও রাশিয়ার সংঘাতের অবসান চাই। নিষেধাজ্ঞা-পাল্টা নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে একটি দেশকে শাস্তি দিতে গিয়ে নারী-শিশুসহ গোটা মানবজাতিকেই শাস্তিদেওয়া হয়। এর প্রভাব কেবল একটি দেশেই সীমাবদ্ধ থাকে না বরং সব মানুষের জীবন-জীবিকা মহাসংকটে পতিত হয়। যুদ্ধ বন্ধের পাশাপাশি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারেরও তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যে শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্ববাসীর আশা-আকাঙক্ষাই প্রতিফলিত হয়েছে। মিয়ানমার থেকে ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে তাড়িয়ে দেওয়ার পরও বাংলাদেশ সংঘাতে জড়ানোর বদলে পাঁচ বছর ধরে প্রতিবেশী দেশটির কাছ থেকে সুপ্রতিবেশী সুলভ আচরণ প্রত্যাশা করছে। আঞ্চলিক শান্তির স্বার্থে এসমস্যার যৌক্তিক সমাধানে জাতিসংঘকে সক্রিয় হতে হবে। বিশ্ববাসীর স্বার্থেই রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ ও অবরোধ-পাল্টা অবরোধ বন্ধেও নিতে হবে গ্রহণযোগ্য পদক্ষেপ।

editor

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *