যুক্তরাজ্যে নতুন বাণিজ্য সুবিধা পেল বাংলাদেশ

যুক্তরাজ্যে নতুন বাণিজ্য সুবিধা পেল বাংলাদেশ

দেওয়ানবাগ ডেস্ক: বাংলাদেশসহ ৬৫টি উন্নয়নশীল দেশের জন্য নতুন বাণিজ্য সুবিধা চালু করেছে যুক্তরাজ্য। এই দেশগুলো থেকে যুক্তরাজ্যে পণ্য প্রবেশের ক্ষেত্রে শুল্কহার কমানো হয়েছে। একই সঙ্গে বাণিজ্যের বিধান সহজ করা হয়েছে। গত সোমবার থেকেই এ সুবিধা চালু করা হয়েছে।
ঢাকায় ব্রিটিশ হাইকমিশন বলেছে, স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ ঘটবে ২০২৬ সালে। যুক্তরাজ্যের নতুন বাণিজ্য সুবিধার অর্থ হলো বাংলাদেশের তৈরি পোশাকসহ ৯৮ শতাংশ রপ্তানির জন্য শুল্কমুক্ত সুবিধা বজায় রাখা হবে। যুক্তরাজ্যের এই বাণিজ্য সুবিধা ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বাণিজ্য সুবিধার তুলনায় অনেক উদার। যুক্তরাজ্য ইইউ থেকে বেরিয়ে আসার (ব্রেক্সিট) পর এই সুবিধা চালু করেছে।

ব্রিটিশ হাইকমিশন জানায়, যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য সুবিধা এই উন্নয়নশীল দেশগুলোর বাণিজ্য, চাকরি বৃদ্ধি এবং টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সাহায্য করবে। এই নতুন পরিকল্পনা বাংলাদেশের সঙ্গে একটি আধুনিক ও পারস্পরিক লাভজনক অংশীদারির প্রতি যুক্তরাজ্যের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।
যুক্তরাজ্য আশা করছে, বাণিজ্য সুবিধার এই কাঠামো বিশ্ব অর্থনীতিতে উন্নয়নশীল দেশগুলোর একীভূতকরণে অবদান রাখবে। এর পাশাপাশি ভবিষ্যতের জন্য শক্তিশালী বাণিজ্য ও বিনিয়োগ অংশীদার তৈরি করতে ভূমিকা রাখবে এবং সরবরাহ শৃঙ্খল শক্তিশালী করবে।
উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য সুবিধায় অন্যান্য দেশের উপাদান ব্যবহার করে পণ্য উৎপাদন সহজ করবে। অন্যান্য দেশের উপাদান ব্যবহার করে পণ্য উৎপাদন করলেও যুক্তরাজ্যের বাজারে শুল্কমুক্ত সুবিধা হারাবে না।
নতুন স্কিমের আওতায় বাংলাদেশ ৯৫টি দেশের কাঁচামাল ব্যবহার করে বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খলে অংশ নিতে পারবে। ওই কাঁচামাল ব্যবহার করে বাংলাদেশে তৈরি পণ্য যুক্তরাজ্যে রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে।

ব্রিটিশ হাইকমিশন জানায়, উন্নয়নশীল ৬৫ দেশের জন্য যুক্তরাজ্যের এই বাণিজ্য সুবিধা অবাধ ও ন্যায্য বাণিজ্য, মানবাধিকার ও সুশাসনকে উৎসাহিত করবে।
মানবাধিকার ও শ্রম অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা, নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার, দুর্নীতিবিরোধী উদ্যোগ, জলবায়ু পরিবর্তন, পরিবেশসহ প্রাসঙ্গিক আন্তর্জাতিক কনভেনশনগুলোর সঙ্গে সম্মতির ওপর এই সুবিধা নির্ভর করবে।
বাংলাদেশে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক বলেছেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য বাণিজ্য সুবিধা বাংলাদেশের উৎপাদনক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করবে। দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও স্থিতিস্থাপকতা বাড়াবে। এ সুবিধা বাংলাদেশকে বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যবস্থার সুবিধা নেওয়ার সুযোগ দেবে। এটি ভোক্তাদের পছন্দের সুযোগ বৃদ্ধি ও প্রতিযোগিতামূলক মূল্যের মাধ্যমে যুক্তরাজ্যকেও সুবিধা দেবে।
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের নতুন বাণিজ্য সুবিধায় বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্তির ঘোষণা আরো গভীর অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্ক এবং বৈশ্বিক মানদন্ডের ভিত্তিতে বাংলাদেশের সঙ্গে একটি আধুনিক ও পারস্পরিক উপকারী অংশীদারির প্রতি আমাদের অঙ্গীকারকে জোরদার করেছে।’

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি ব্যারিস্টার সামির সাত্তার বলেন, যুক্তরাজ্য সরকারের ডেভেলপিং কান্ট্রিস ট্রেডিং স্কিম (ডিসিটিএস) বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যের জন্য সুখবর ।
তিনি বলেন, ২০২৬ সালের পর বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পর শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা হারানোর শঙ্কা রয়েছে। এই অবস্থায় যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য সুবিধা অনেকটা স্বস্তি দেবে। এ ছাড়া যুক্তরাজ্যের বাজারে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা ধরে রাখতে এই নীতি বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে।

editor

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *