মূল্যস্ফীতি রোধে ব্যবস্থা নিন

মূল্যস্ফীতি রোধে ব্যবস্থা নিন

আমাদের বাজারব্যবস্থায় কারো কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। প্রতিযোগিতা কমিশন আছে, প্রতিযোগিতা নেই। ভোক্তার অধিকার উপেক্ষিত বাজারে। আইন আছে, আইনের প্রয়োগ নেই। মূল্যস্ফীতি দেশের স্থির আয়ের জনগোষ্ঠীকে নতুন এক বাস্তবতার মুখোমুখি করেছে। মধ্যবিত্ত পরিবার বেকায়দায়। নিত্যপণ্য কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
মূল্যস্ফীতি বাংলাদেশের চলার পথে এখন বড় প্রতিবন্ধক। উন্নয়ন এবং মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপনে এর প্রভাব পড়ছে। সরকারকেও তা ভাবিয়ে তুলেছে। তারই প্রতিফলন আমরা দেখতে পাচ্ছি গত সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে। অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীকে কঠোরভাবে বাজার তদারকি করার নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীকে বলেছেন, বাজার মনিটরিং যেন জোরালোভাবে হয়। বাজারে সাপ্ল¬াই যেন ঠিক থাকে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কোনো কোনো পণ্যের সরবরাহে ঘাটতি না থাকলেও দাম বাড়ছে। এ রকম অযৌক্তিক দাম বৃদ্ধি বন্ধ করতে বাজারে মনিটরিং কঠোর করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বিষয়ে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, সামনে কোরবানির ঈদ।
উৎসব এলেই কিছু ব্যবসায়ীর বাড়তি মুনাফা করার প্রবণতা থাকে। বাজারে যাতে অযৌক্তিকভাবে পণ্যমূল্য না বাড়ে, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
উৎসব এলেই কিছু ব্যবসায়ীর বাড়তি মুনাফা করার প্রবণতার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের বাজার ব্যবস্থাপনা মোটেই সংগঠিত নয়। এর সুযোগ নিয়ে এক শ্রেণির ব্যবসায়ীকে বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানোর প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতে দেখা যায়। কোনো কোনো সময় বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেও পণ্যের দাম বাড়ানো হয়। তবে কঠোরভাবে বাজার নজরদারি করা হলে এই কারসাজি রোধ করা সম্ভব। আবার এটাও ঠিক যে বাজারের নিয়ন্ত্রণ সরকার নিতে না পারলে কোনোভাবেই পণ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করা সম্ভব হবে না।
আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের বিশেষ অগ্রাধিকারের প্রথমটি ছিল দ্রব্যমূল্য সবার ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া। নতুন সরকার গঠনের পর প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠক ও সচিবসভায়ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তরগুলোকে পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সাধারণ মানুষের জীবনযাপনের চ্যালেঞ্জগুলো এখন সামনে চলে এসেছে। খুব স্বাভাবিকভাবেই মানুষ কিভাবে জীবন যাপন করছে সেটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। প্রশ্ন হচ্ছে, মানুষের চাহিদা পূরণ করার জন্য সুষ্ঠু ব্যবস্থা কি আমাদের দেশে আছে? তাহলে এখন আমাদের কী করতে হবে? প্রথম এবং প্রধান বিষয় হচ্ছে, মূল্যস্ফীতি রোধে ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী সেই নির্দেশনাই দিয়েছেন। স্থির আয়ের মানুষের পাশে কিভাবে দাঁড়ানো যায় সেই পরিকল্পনা করতে হবে। সরকার বিভিন্ন সময়ে টিসিবির ট্রাক সেল করেছে। কিন্তু দেখা গেছে, একটা গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে, যাদের প্রতিদিন পাওয়া যায় টিসিবির ট্রাকের লাইনে। কাজেই স্থায়ী একটা ব্যবস্থা খুঁজে বের করা দরকার।

editor

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *