মধ্যপ্রাচ্যে নির্যাতিত নারীকর্মী

মধ্যপ্রাচ্যে নির্যাতিত নারীকর্মী

নারী ডেস্ক: সৌদি ফেরত ১২ নারীকর্মী তাদের গৃহকর্তার হাতে ভয়াবহ নির্যাতনের অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়েছেন পুলিশের কাছে। শনিবার আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সহায়তায় দেশে ফিরেছেন তারা।
এপিবিএন জানিয়েছে, সৌদি আরব যাওয়ার পরপরই এই নারীকর্মীদের মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হয়। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেওয়া হতো না। দিনে দুবারও ঠিকমতো খাবার দেওয়া হতো না। চাবুক দিয়ে প্রহার করা হতো। গৃহকর্তা স্বামী ও স্ত্রী দুজনে মিলেই মারধর করত। বোতল দিয়েও আঘাত করা হতো। বস্তুত সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের কোনো কোনো দেশে গৃহকর্মী হিসাবে যাওয়া নারীকর্মীদের এ ধরনের দুঃসহ অভিজ্ঞতা নতুন নয়। গত কয়েক বছর ধরেই এমন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে এদেশ থেকে নারীদের ওইসব দেশে গৃহকর্মী হিসাবে কাজ করতে যাওয়া উচিত কিনা, এমন প্রশ্নও উঠছে।
বলার অপেক্ষা রাখে না, আর্থিক অনটন বা পরিবারের অসচ্ছলতার কারণেই দরিদ্র নারীরা গৃহকর্মী হিসাবে কাজ করতে বিদেশে যায়। কেউবা পরিবারের চাপেও বিদেশে যেতে বাধ্য হয়। বিদেশে যাওয়ার পর সেখানে অনেক ক্ষেত্রে তারা ক্রিতদাসের মতো আচরণের শিকার হয়। যেসব নারী নির্যাতনের শিকার হয়ে ফিরে আসে, তাদের মুখে শোনা যায় নিগ্রহের নানা কাহিনি। এ অবস্থায় নারীকর্মীদের বিদেশে পাঠানোর ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের অধিকতর সতর্ক ও দায়িত্বশীল হওয়া প্রয়োজন। যেসব রিক্রুটিং এজেন্সিকে শ্রমিক পাঠানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়, তাদের প্রতি এ বিষয়ে অবশ্যই কঠোর নির্দেশনা থাকা দরকার। সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যে নারীকর্মী পাঠানোর আগে তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি সবার আগে বিবেচনায় রাখতে হবে। এ ব্যাপারে ওইসব দেশে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাসের কর্মকর্তাদেরও দায়িত্ব রয়েছে। কোনো নারীকর্মী নির্যাতনের শিকার হলে তাকে দ্রত আইনি সহায়তা প্রদান করতে হবে। সৌদি আরবের সঙ্গে আমাদের সরকারের সম্পর্ক বেশ ভালো। কাজেই সরকারি পর্যায়ে নারীকর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়টি আলোচনায় গুরুত্ব পেলে অবস্থার পরিবর্তন হতে পারে। সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যে কর্মরত সব নারী শ্রমিকের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে, এটাই কাম্য।

editor

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *