দেওয়ানবাগ ডেস্ক: ‘একটি ছোট শহরের জনসংখ্যার সমান যাত্রী’ নিয়ে সাগরে ভাসল বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রমোদতরি ‘আইকন অব দ্য সিজ’। গত শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার মায়ামি থেকে যাত্রা শুরু করেছে পেল্লায় আকারের নৌযানটি। চমক জাগানোর পাশাপাশি অতিকায় এই জাহাজ থেকে মিথেন গ্যাস নিঃসরণ নিয়ে দেখা দিয়েছে উদ্বেগও।
প্রমোদভ্রমণ কম্পানি রয়াল ক্যারিবিয়ান ইন্টারন্যাশনালের মালিকানাধীন এক হাজার ১৯৭ ফুট দীর্ঘ এই প্রমোদতরিটি। সর্বোচ্চ সাত হাজার ৬০০ যাত্রী বহন করতে সক্ষম এটি। তরিতে কর্মীই রয়েছে দুই হাজার ৩৫০ জন।
প্রমোদতরিটি নির্মাণ করা হয় ফিনল্যান্ডের তুর্কুর একটি জাহাজ কারখানায়। এটি নির্মাণ করতে ৯০০ দিনের বেশি সময় লেগেছে। আইফেল টাওয়ারের চেয়েও লম্বা এই প্রমোদতরিটি ২০ তলার। রয়েছে সাতটি সুইমিংপুল, ছয়টি ওয়াটার স্লাইড। ২০০ কোটি ডলার ব্যয়ে নির্মিত এই প্রমোদতরিতে রয়েছে ৪০টির বেশি রেস্তোরাঁ, পানশালা ও লাউঞ্জ। এর পরও যদি কোনো যাত্রীর মন না ওঠে, তাহলে তাদের জন্য রয়েছে অর্ধশত সংগীতশিল্পী ও কৌতুক অভিনেতার পাশাপাশি ১৬টি অর্কেস্ট্রা।
প্রমোদতরিটি সাত দিনের জন্য ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে বেড়াবে। রয়াল ক্যারিবিয়ানের প্রথম কোয়ান্টাম ক্লাস জাহাজটির টিকিটের ‘অভূতপূর্ব’ চাহিদা ছিল বলে কম্পানিটি জানিয়েছে।
এর আগে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক লিওনেল মেসি প্রমোদতরিটির নামকরণ অনুষ্ঠানে অংশ নেন। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ক্লাব ইন্টার মায়ামির হয়ে খেলছেন মেসি। তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) চালিত প্রমোদতরিটি বাতাসে ক্ষতিকর মিথেন নিঃসরণ করবে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন পরিবেশবিদরা।
যদিও জ্বালানি তেলের মতো প্রচলিত সামুদ্রিক জ্বালানির তুলনায় এলএনজি পরিবেশবান্ধব। কিন্তু তার পরও কিছু গ্যাস নিঃসরণের ঝুঁকি থাকে। ফলে বায়ুমণ্ডলে মিথেন ছড়িয়ে পড়তে পারে। কার্বন ডাই-অক্সাইডের চেয়েও বিপজ্জনক গ্রিনহাউস গ্যাস মিথেন। তবে রয়াল ক্যারিবিয়ানের দাবি, অন্যান্য ছোট প্রমোদতরির চেয়ে আইকন অব দ্য সিজ বেশি পরিবেশবান্ধব।
রয়াল ক্যারিবিয়ান ইন্টারন্যাশনাল বলছে, আধুনিক জাহাজের গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমাতে আন্তর্জাতিক মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের বিদ্যমান জ্বালানি দক্ষতা সূচকের চেয়েও ২৪ শতাংশ বেশি শক্তিসাশ্রয়ী আইকন অব দ্য সিজ। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটি ২০৩৫ সালের মধ্যে তাদের জাহাজ থেকে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা করেছে।
বাণিজ্য সংস্থা ক্রুজ লাইনস ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশনের মতে, ক্রুজশিল্প পর্যটনের উদীয়মান খাতগুলোর মধ্যে একটি। বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে প্রমোদতরিতে ছুটি কাটানোর আগ্রহ বেড়েছে। ২০২১ সালে ক্রুজশিল্প বৈশ্বিক অর্থনীতিতে সাড়ে সাত হাজার কোটি মার্কিন ডলার অবদান রাখে।