লক্ষীপুর সংবাদদাতা: ভরাবর্ষায়ও পর্যাপ্ত বৃষ্টি হচ্ছে না লক্ষীপুরে, ফলে বৃষ্টিনির্ভর আমন চাষ নিয়ে বিপাকে রয়েছেন লক্ষীপুরের ধানচাষীরা।
মেঘনা নদীর মোহনা ও বঙ্গোপসাগর তীরবর্তী জেলা লক্ষীপুরে প্রধান ধান ফসল আমন। সমুদ্রতীরবর্তী হওয়ায় এই জেলায় লবণাক্ততার সমস্যা রয়েছে। একারণে সারাদেশে শীতকালীন বোরো মৌসুমে ধানের আবাদ বেশি হলেও এ জেলায় এটি ব্যতিক্রম। শুষ্কমৌসুমে এখানে লবণাক্ততা বেড়ে যায়। নদী বা খাল কম থাকায় ভূপৃষ্ঠস্থ পানি সেচের সুবিধাও কম। তাছাড়া গভীর নলকূপের সংখ্যা কম থাকায় বিদ্যমান সেচ সুবিধা ব্যাপক বোরো চাষাবাদের অন্তরায়।
এ কারণে এ জেলায় প্রধানত বৃষ্টিনির্ভর আউশ ও আমন চাষাবাদ বেশি হয়। বিগত বছরে ২৭ হাজার ৮১৬ হেক্টর জমিতে আউশ ও ৮০ হাজার ৫৪৫ হেক্টর জমিতে আমন চাষাবাদ হয়েছিল। কিন্তু এ বছর অপর্যাপ্ত বৃষ্টির কারণে আউশ ও আমন ধান চাষাবাদ বিঘিœত হচ্ছে।
এ বছর জেলায় আউশ ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৫ হাজার ৬০০ হেক্টর। কিন্তু বৃষ্টি না হওয়ায় কৃষকরা সময়মত বীজ বুনতে বা চারা করেও জমিতে লাগাতে পারেন নি। ফলে লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকেরও কম আবাদ অর্জন হয়েছে। আউশ লাগানোর সময় ইতোমধ্যে চলে গেছে। সাময়িক কিছু বৃষ্টিপাত হলেও আবাদের সময় চলে যাওয়ায় আউশের জমি অনাবাদীই রয়ে গেছে।
বর্তমানে আমন মৌসুমে জেলায় আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৮১ হাজার ৫৫০ হেক্টর। কৃষকরা সবেমাত্র আমন আবাদ শুরু করেছেন। কিন্তু অন্যান্য বছরগুলোতে এ সময়ে প্রতিদিন নিয়মিত পর্যাপ্ত বৃষ্টি হলেও এবার বৃষ্টির প্রায় দেখাই নেই। ফলে যথাসময়ে আমন ধান লাগাতে পারবেন কিনা, এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন এ জেলার বৃষ্টি নির্ভর আমন চাষীরা।
আগামী কিছুদিন নিয়মিত বৃষ্টি হলে কেটে যেতে পারে আমন আবাদের সব বাধা, কিন্তু অপর্যাপ্ত আর অনিয়মিত বৃষ্টির এই ধারা অব্যাহত থাকলে আউশের মত আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়েও রয়েছে আশংকা ও অনিশ্চয়তা।