অর্থনৈতিক প্রতিবেদক: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ আর গ্যাসবিদ্যুৎ সংকটের ফলে তৈরি পোশাকখাতে রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিজিএমইএ সভাপতি মো. ফারুক হাসান। তিনি বলেন, গত ২ মাসে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি কমছে। গত সেপ্টেম্বরে প্রবৃদ্ধি কম হয়েছে ৭.৫২ শতাংশ। অক্টোবরেও রপ্তানি ২০ শতাংশ কম হতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
গত রবিবার তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মো. ফারুক হাসান এসব কথা বলেন। গত বছরের আগস্ট থেকে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত পোশাক রপ্তানিতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি ছিল। গত অর্থবছরে এই খাত থেকে প্রায় চার হাজার ২০০ কোটি ডলার আয় হয়েছে।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অস্থিরতা, মুদ্রাস্ফীতি এবং স্থানীয় বাজারের প্রভাব দ্বারা মার্কিন, জার্মানিসহ সব প্রধান বাজার প্রভাবিত হচ্ছে। এতে আগামী নভেম্বরে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি আরো কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘জ্বালানিসংকটের কারণে দেশে ঘন ঘন লোড শেডিং হচ্ছে, যার প্রভাব পড়ছে উৎপাদনে। এ জন্য তিনি বিশেষ ব্যবস্থায় পোশাক কারখানায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহের আহবান জানান। গতকাল ‘সেন্টার অব ইনোভেশন, এফিশিয়েন্স অ্যান্ড ওএসএইচ’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানের শুরুতে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, দক্ষতার উন্নয়ন, টেকসই রূপকল্প বাস্তবায়ন এবং প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র সেন্টার অব ইনোভেশন, এফিশিয়েন্স অ্যান্ড ওএসএইচ উদ্বোধন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের অন্যতম চ্যালেঞ্জ হচ্ছে প্রযুক্তি ও অটোমেশন। তাই বিজিএমইএ বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়াতে তার সদস্য কারখানাগুলোর জন্য সেন্টার অব ইনোভেশন, এফিশিয়েন্স অ্যান্ড ওএসএইচ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, শিল্পকে উৎকর্ষের উচ্চতর পর্যায়ে নিয়ে যেতে হলে পণ্যের নকশা পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়া, লিড টাইম হ্রাস করা, সর্বশেষ প্রযুক্তি গ্রহণ করা, উৎপাদন ব্যয় হ্রাস করা এবং কারখানাগুলোকে আরো টেকসই করার কোনো বিকল্প নেই।
ফারুক হাসান বলেন, ‘আমরা যদি শিল্পের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়াতে পারি, স্বচ্ছতা বাড়াতে পারি এবং ক্রেতাদের কাছে একটি গ্রহণযোগ্য, নির্ভরযোগ্য ও গ্রিন প্ল্যাটফরম হিসেবে নিজেদের উপস্থাপন করতে পারি, শিল্পকে টেকসই করতে পারি, তাহলে আমাদের রপ্তানি ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে।