নারীর অপরিহার্যতা

নারীর অপরিহার্যতা

নারী ডেস্ক: পৃথিবীর বুকে জন্ম নেওয়া সব জিনিসেরই স্ব স্ব স্থানে আভিজাত্য রয়েছে। মানুষের স্বাভাবিক বিষয়গুলোর মধ্যে একটি বিষয় হলো সৌন্দর্য ও আভিজাত্যের প্রতি মুগ্ধ হওয়া। সৌন্দর্য সবার মন জয় করতেই আবির্ভূত হয়েছে। কুৎসিত কদর্যতা না থাকলে বোঝা যেত না, সৌন্দর্য ও আভিজাত্যের গুরুত্ব কতটুকু। ঠিক তেমনি মন্দের বিপরীতে ভালো না থাকলে কেউ-ই ভালোর প্রশংসায় মেতে উঠত না। আবার অশুভ ছোবল না থাকলে নারীদের মূল্য মর্যাদা কতটুকু? বুঝে আসত না।
একজন নারীর রূপ-সৌন্দর্য ও সতীত্ব তার জীবনের চেয়েও মহামূল্যবান। জীবন চলে যেতে পারে কিন্তু সতীত্বের জলাঞ্জলি দেওয়া কারও কারও পক্ষে মোটেও সম্ভব হয়ে উঠবে না।
প্রাচীনকালে একজন ‘নারী’ তার সতীত্ব রক্ষা থেকে শুরু করে, শিক্ষার অধিকার, সমাজ- সংসার, আত্মমর্যাদা ও মানবতাবোধের অধিকার, উত্তম আচরণের অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিল। কিন্তু বর্তমান পৃথিবীতে স্রষ্টার প্রদত্ত ‘ধর্ম’ ইসলাম ফিরিয়ে দিয়েছে নারীর সব অধিকার ও সম্মান।
‘নারী’ স্রষ্টার এক বিস্ময়কর সৃষ্টি। সৃষ্টি থেকে শেষ অবধির কেন্দ্রে রয়েছে নারী, নানা রূপ একজন নারীর। কখনো মেয়ে, কখনো স্ত্রী, কখনো মা, আবার কখনো শাশুড়ি। নির্দিষ্ট নির্দিষ্ট স্থানে নির্দিষ্ট নির্দিষ্ট মানমর্যাদা আভিজাত্য। এগুলোর পাশাপাশি আরেকটি মর্যাদা আছে সেটা নারীর পুরো জীবনজুড়েই, তা হলো সতীত্বের মর্যাদা।
নারীর পুরো শরীরজুড়েই তার সতীত্ব। আর এই সতীত্ব রক্ষার্থে নারীকে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করবে তার পোশাক পরিচ্ছদ। সৃষ্টিকর্তা মানুষকে বিবেকবুদ্ধি নামক এক অমূল্য সম্পদ উপহার দিয়েছেন- যা তার অন্য কোনো সৃষ্টিকে দেননি। এজন্য তাদের শরীর গঠন ও জীবন গঠন অন্যরকম। জীবনজুড়ে ‘যৌবনের’ গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য ততদিন পর্যন্ত উপলব্ধি করা যায় না, যতদিন না বার্ধক্যের ভাঁজ শরীরে এসে না পড়ছে। ঠিক তেমনি, সতীত্বের গুরুত্বও ততদিন বোঝা যাবে না, যতদিন না ধর্ষিতার জীবনের গল্প না শোনা হবে বা জানা যাবে। নারীর সতীত্ব রক্ষা থাকলে তার মর্যাদা মিলবে মেয়ে, স্ত্রী, মা, বোন শাশুড়ি হিসেবে। কিন্তু সতীত্ব হারিয়ে গেলে, হারাবেন তিনি সব সম্মান।
নারীর রূপ-লাবণ্য সবকিছুই নারীর সতীত্বের এক একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। আর এই সতীত্বের যথাযথ হেফাজত নারীকেই করতে হবে। সতীত্বের ব্যাপারে যত্নবান হওয়াই নারীর মর্যাদা বৃদ্ধির সর্বোচ্চ উপায় উপকরণ। নারীর সতীত্বের যে কত চড়ামূল্য তা বোঝা যাবে, যার সতীত্ব হারিয়ে গেছে তার জীবনের গল্প থেকে।
বর্তমান সমাজে নারীর অবস্থা, আর প্রাচীনকালের আইয়্যামে জাহেলি যুগের নারীর অবস্থা পুরোপুরি মিল না থাকলেও কোনো অংশে কমও থাকবে না। ‘আইন ও সালিশ কেন্দ্র’ (আসক), ‘তথ্য সংরক্ষণ ইউনিটের পরিসংখ্যান’ অনুযায়ী ২০২২ সালে সারাদেশে ধর্ষণ ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে মোট ‘১৩২১ জন’। এর মধ্যে ধর্ষণপরবর্তী খুন হয়েছে ৪৭ জন এবং ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছেন ৯ জন।
পারিবারিক, সামাজিক, নানা ধরনের হেনস্তার স্বীকার হতে হয় ওই নারীকে। যা একজন নারী হিসেবে সহ্য করা খুবই দুরূহ। তাই তাদের বেছে নিতে হয় ‘আত্মহত্যার’ মতো মারাত্মক জঘন্য কাজকেও। বেঁচে থাকলে জীবনের পুরো সময় ধরে এই গস্নানি টানতে হয়। আইনের আশ্রয় নিয়ে যদি কোনো আসামিকে উপযুক্ত শাস্তি না দেওয়া যায়, তাহলে সাময়িক জেল খেটে বের হয়ে ওই আসামি আবার ভয়ংকর রূপ ধারণ করে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য।
একজন ধর্ষক পুরুষ তার অপরাধ ধামাচাপা দিয়ে পুনরায় সুখের সংসার শুরু করতে পারে। কিন্তু একজন ‘নারী’ যদি বিবাহিত পুরুষ থেকে তালাকপ্রাপ্ত হয়ে যায়, তাহলে তার মা-বাবার জন্য বোঝাস্বরূপ হয়ে জীবন কাটাতে হয়- যা খুবই হতাশাজনক জীবন। দ্বিতীয়বার তাকে আর উপযুক্ত স্থানে পাত্রস্থ করা মা-বাবার জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে যায়। নারীকে এ জন্য আরও বেশি সচেতন হতে হবে, যাতে ‘হাতের টিস্যুর’ মতো পুরুষরা তাদের ব্যবহার করতে না পারে।

editor

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *