জাদুঘর হচ্ছে লাকসাম নওয়াব ফয়জুন্নেছা জমিদারবাড়ি

জাদুঘর হচ্ছে লাকসাম নওয়াব ফয়জুন্নেছা জমিদারবাড়ি

কুমিল্লা সংবাদদাতা: চলতি বছরের নভেম্বরের পুথম সপ্তাহে চালু হতে যাচ্ছে লাকসামের পশ্চিমগাঁওয়ে অবস্থিত নওয়াব ফয়জুন্নেছা জমিদারবাড়ি জাদুঘর। এ উপলক্ষ্যে নবরূপে সেজে উঠেছে উপমহাদেশের প্রথম মুসলিম নারী নবাব ফয়জুন্নেছা চৌধুরাণীর স্মৃতিবিজড়িত জমিদার বাড়িটি। আনুষ্ঠানিকভাবে জাদুঘর উদ্বোধনের জন্য চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি।
জানা যায়, ২০১৭ সালে গেজেট ও প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তর লাকসাম পশ্চিমগাঁও নওয়াব বাড়িসংলগ্ন ৪.৫৫ একর জায়গা অধিগ্রহণ করে। কিন্তু বিভিন্ন আইনি জটিলতার কারণে বিগত ছয় বছর এ বিষয়ে উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি অর্জন সম্ভব হয়নি। বরং ভূমিদস্যু ও অসাধু মহলের কারসাজিতে নওয়াব বাড়ির অনেক মূল্যবান ঐতিহ্য ও স্থাপনা এখন ধ্বংস ও বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে। স্থানীয় সংসদ সদস্য ও এলজিআরডি মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের হস্তক্ষেপে এই জটিলতা নিরসন ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এ বছর প্রথম দিকে পুনরায় শুরু হয়। এলজিআরডি মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের আহ্বানে সাড়া দিয়ে সাংস্কৃতিক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ চলতি বছরের ২ জুন নওয়াববাড়ি পরিদর্শন করেন এবং জাদুঘর প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমেদের উপস্থিতিতে গত ২০ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালকের মধ্যে পশ্চিমগাঁও নওয়াব বাড়িতে জাদুঘর প্রতিষ্ঠায় সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
চলতি বছরের ৭ অক্টোবর জাতীয় জাদুঘরের কনফারেন্স রুমে নওয়াব ফয়জুন্নেছার বংশধরদের সঙ্গে মতবিনিময় ও আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। জাদুঘরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মোহাম্মদ কামরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত মতবিনিময় সভায় নওয়াব ফয়জুন্নেছা ওয়াকফ এস্টেটের মোতাওয়াল্লী সৈয়দ মাসুদুল হক, সৈয়দ কামরুল হক, এস এম মাহফুজুল হক, ওসমান আলী চৌধুরী, আয়াজ আলী চৌধুরী, কাজী মোহাম্মদ হোসেন শিপু, কাজী ইকবাল হোসেন খালেদ, সৈয়দা রেহানা হক, সৈয়দ গাজীউল হক, আইনুন নিশাত তাজোয়ার, সৈয়দ নাসির উদ্দিন হায়দার, সৈয়দ এনামুল হক, মনজুর আলম চৌধুরী ছোটন, সৈয়দ তানজিলা হক তান্নি, সৈয়দ তাওয়াজ আহমেদ, সৈয়দ আসফাকুল হক, সৈয়দ রাকিবুল হক, মাহমুদা হায়দার, আমীর সেলিম, সৈয়দ আজাদুল হক, কাজী সাজ্জাদ হোসেন, সৈয়দ কামরুন্নেছা হক, সৈয়দ তানজিনা হক, সৈয়দ সামসিয়া হকসহ নওয়াব ফয়জুন্নেছার ৫ম, ৬ষ্ঠ ও ৭ম জেনারেশনের ২৪ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, বিশিষ্ট লেখক গবেষক ড. এস এম ইলিয়াছ, বিশিষ্ট সাংবাদিক এস এম দোহা, জাতীয় জাদুঘরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
উপস্থিত সবাই উন্মুক্ত মতামত ও আলোচনায় অংশগ্রহণ করে সর্বসম্মতিক্রমে জাদুঘর প্রতিষ্ঠায় সম্মতি প্রকাশ ও সহযোগিতার আশ্বাস দেন। এ সময় জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, নওয়াব ফয়জুন্নেছার ব্যবহৃত বিভিন্ন দ্রব্য ও সামগ্রী, যা এখন ইতিহাস। এসব নিদর্শন তার আত্মীয়স্বজন, পশ্চিমগাঁও ও আশপাশের এলাকার অনেকের কাছেই সংরক্ষিত আছে। এসব ঐতিহাসিক নিদর্শন ও ব্যবহৃত সামগ্রীসমূহ জাতীয় জাদুঘর কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তরের মাধ্যমে ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নেওয়ার জন্য তিনি সবার প্রতি উন্মুক্ত আহ্বান জানান।

editor

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *