এক টাকায় চিকিৎসা

এক টাকায় চিকিৎসা

রাজশাহী সংবাদদাতা: রাজশাহীতে এক টাকায় মিলছে চিকিৎসাসেবা। এই সেবা দিচ্ছেন সুমাইয়া বিনতে মোজাম্মেল নামের সদ্য এমবিবিএস পাস করা এক চিকিৎসক। বাবার ইচ্ছায় জনসেবার উদ্দেশ্য নিয়ে তিনি শুরু করেন এক টাকায় রোগী দেখা।

সুমাইয়ার বাড়ি রাজশাহীতেই। তাঁর বাবা মীর মোজাম্মেল আলী রাজশাহীর শহীদ কামারুজ্জামান সরকারি ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক। মোজাম্মেল আলীর ইচ্ছা ছিল ডাক্তার হওয়ার, কিন্তু তিনি হতে পারেননি। তাই চেয়েছিলেন ৪ সন্তানকেই ডাক্তার বানাবেন। চারজন না হলেও তিন বোন ডাক্তার হয়েছেন, একমাত্র ভাই ইঞ্জিনিয়ার।

সুমাইয়া ২০১৫ সালে রাজশাহীর নিউ গভ. ডিগ্রি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। বাবার স্বপ্ন পূরণে ভর্তি হন রাজশাহীর ইসলামী ব্যাংক মেডিক্যাল কলেজে। সম্প্রতি এমবিবিএস পাস করার পর ইন্টার্ন শেষ করেছেন তিনি।

এখন নগরীর সাহেববাজারে বাবার ওষুধের দোকানে প্রাথমিকভাবে রোগী দেখছেন সুমাইয়া। সপ্তাহের শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত রোগী দেখেন তিনি। এরই মধ্যে তিনি ভালো সাড়া পেয়েছেন। বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা রোগীরা তাঁর কাছ থেকে সেবা নিচ্ছে।

চিকিৎসা নিতে আসা নাজমুল হক বলেন, ‘মাত্র এক টাকার ভিজিটেই চিকিৎসকের পরামর্শ পেলাম। দরিদ্ররা খুবই উপকৃত হবে।’

এক টাকা নেওয়ার কারণ হিসেবে সুমাইয়া জানালেন তাঁর একটি সংগঠনের কথা। করোনা মহামারির সময় তিনি দ্য ফাইভ ফাউন্ডেশন নামের একটি সংগঠনের কার্যক্রম শুরু করেছিলেন। সংগঠনটি মানুষের মৌলিক চাহিদা নিয়ে কাজ করে। রোগীদের কাছ থেকে এই এক টাকা নেওয়া হচ্ছে সংগঠনের আয় হিসেবে।

এভাবে চিকিৎসা দিতে পেরে বেশ খুশি সুমাইয়া। তিনি বলেন, ‘যত দিন আল্লাহর রহমতে বেঁচে থাকব, তত দিন এই কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা আছে।’

সুমাইয়ার বাবা মীর মোজাম্মেল আলী রাজশাহীর শহীদ কামারুজ্জামান সরকারি ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক। তিনি বলেন, ‘ইচ্ছা ছিল আমার ৪ সন্তানই ডাক্তার হবে। ৩ মেয়ে ডাক্তার হয়েছে, আরেকজন ইঞ্জিনিয়ার। আমার লক্ষ্য ছিল, তারা প্রত্যেকেই মানুষের সেবা করবে। আমি ডাক্তার হতে পারিনি। তাই সন্তানদের মধ্য দিয়েই স্বপ্নটা পূরণের চেষ্টা করছি।’

ইসলামী ব্যাংক মেডিক্যাল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সানাউল হক মিয়া বলেন, ‘মহৎ উদ্যোগ নিয়েছে সুমাইয়া। তরুণ প্রজন্মের কাছে এটাই তো আশা করি। প্রত্যেকেরই এভাবে সমাজসেবা করা উচিত।’

editor

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *